গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি প্রস্তাবের জবাব দেয় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এতে কিছু ‘যদি, কিন্তু’ রাখলেও বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখে হামাস। এরপর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ফোন করেন তিন। তবে হামাসের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে নেতানিয়াহুর ধারণা ভিন্ন ছিল। এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নেতানিয়াহুকে ট্রাম্পকে বলেন, এটা উদ্যাপনের কিছু নয় এবং এর কোনো মানে নেই।’
ট্রাম্প তখন কড়া সুরে নেতানিয়াহুকে ইংরেজি ‘এফ বর্গীয় গালি’ উচ্চারণ করে উত্তর দেন, ‘আমি জানি না, তুমি কেন সব সময় এত ফা***ং নেতিবাচক। এটা একটি জয়। এটি মেনে নাও।’
অপর দুই মার্কিন কর্মকর্তা এই কথোপকথনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এতে দেখা যায়, ট্রাম্প কতটা দৃঢ়ভাবে নেতানিয়াহুর অনিশ্চয়তাকে পেছনে ঠেলে দিতে চাইছেন। তারা বলছেন, হামাস যদি চুক্তি করতে চায়, তবে তিনি নেতানিয়াহুকে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য রাজি করাতে চান।
ট্রাম্পের পরিকল্পনার ওপর হামাসের আনুষ্ঠানিক জবাবে বলা হয়েছে, তারা সব বাকি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি, বিনিময়ে যুদ্ধ বন্ধ এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে। তবে গোষ্ঠীটি অনেক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার অনুরোধ করেছে।
এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার ব্যক্তিগত পরামর্শকালে, নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন যে তিনি হামাসের জবাবকে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রত্যাখ্যান হিসেবে দেখছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করতে চান যাতে এমন ভাব তৈরি না হয় যে হামাস ইতিবাচক জবাব দিয়েছে।
ট্রাম্পের মনোভাব সম্পূর্ণ ভিন্ন। এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, তিনি চিন্তিত ছিলেন হামাস পরিকল্পনাকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করবে, কিন্তু বাস্তব জবাবকে একটি চুক্তির সম্ভাবনা হিসেবে দেখেছেন। ট্রাম্প যখন নেতানিয়াহুকে ফোন করেন, তখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে যা প্রত্যাশা করেছিলেন তার চেয়ে আলাদা প্রতিক্রিয়া দেন তিনি। এ জন্যই ট্রাম্পের উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনের কিছুক্ষণ পর ট্রাম্প এক বিবৃতি জারি করেন, যেখানে তিনি ইসরায়েলকে গাজায় বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিন ঘণ্টা পরে নেতানিয়াহু সেই নির্দেশ দেন। শনিবার নেতানিয়াহুর সহকর্মীরা জোর দিয়ে বলেন, ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে তিনি এবং ট্রাম্প পুরোপুরি একমত। নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন এবং ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যের সেই অংশগুলোকে গুরুত্ব দিয়েছেন, যা তিনি সমর্থন করেন।
এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবারের ফোনালাপে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক অনেক বেশি বিরোধপূর্ণ ছিল এবং ট্রাম্প বিরক্ত ছিলেন। অপর দুই মার্কিন কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, কঠোর ও দৃঢ়’ আলোচনার পরও তাঁরা চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত, ট্রাম্প শান্তি চান এবং সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এটি বাস্তবায়নের জন্য।