ঢাকা, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫ | ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ | ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম

সেফ এক্সিট: এনসিপি নেতাদের অভিযোগে ৪ উপদেষ্টা প্রতিক্রিয়া

সেফ এক্সিট: এনসিপি নেতাদের অভিযোগে ৪ উপদেষ্টা প্রতিক্রিয়া

অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা সেফ এক্সিট বা নিরাপদে সরে যাওয়ার উপায় খুঁজছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই নেতা। হঠাৎ করে কেন তারা এই প্রসঙ্গ তুললেন সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। এদিকে তাদের এমন অভিযোগের পর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কয়েকজন উপদেষ্টা।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেফ এক্সিট প্রসঙ্গটি তোলেন। পরে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও একই বিষয়ে বক্তব্য দেন তাদের দলের এক সভায়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা দেখা গেছে।

এ প্রসঙ্গে এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট নিয়ে তার দলের নেতাদের বক্তব্য, এটা এনসিপিরই সামগ্রিক বক্তব্য। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিচার ও সংস্কার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা। সেটি পালনের দায়িত্ব নিয়েও তা না করে কোনো কোনো উপদেষ্টা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বাঁচতে চান। নাহিদ কিংবা সারজিস সেই বিষয়টিই বলেছেন। তবে সেফ এক্সিট প্রশ্ন তুললেও নাহিদ কিংবা সারজিস সুনির্দিষ্ট করে কোনো উপদেষ্টার নাম বলেননি।

বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসলেই কি উপদেষ্টারা এক্সিট খুঁজছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সব রাজনৈতিক দলের মতো নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সরকারের ভালো একটা ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ  আছে। এটা উনি অভিমান থেকে বলেছেন নাকি উনার কোনো বিষয়ে গ্রিভেন্স আছে। এ বিষয়গুলো উনাকেই পরিষ্কার করতে হবে। উনি যদি কখনো পরিষ্কার করেন, তখন সেটা নিয়ে সরকারের বক্তব্যের কথা আসে। সেটির আগে সরকারের বক্তব্যের কোনো সুযোগ নেই। আমি একদম কোনো এক্সিট খুঁজছি না। দেশেই ছিলাম, এর আগেও বহু ঝড়ঝঞ্ঝা এসেছে। সেসব ঝড়ঝঞ্ঝা প্রতিহত করে দেশেই থেকেছি। বাকিটা জীবনও বাংলাদেশেই কাটিয়ে যাব।’

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।  স্ট্যাটাসের শেষের দিকে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির লিখেছেন, এ বিষয়টি উত্থাপনকারী, প্রাক্তন উপদেষ্টা ও বর্তমান এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন ও জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনা হিসাবে শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তার বক্তব্যের ওপর আমার মন্তব্য করা শোভন নয়। তাছাড়া আমি রাজনৈতিক বিষয়ে কোন মন্তব্য করি না। নিজের সীমিত সামর্থের সবটুকু ব্যবহার করে জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন করেছি। শিক্ষকতার সূত্রে, ইতিপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ গ্রহণ করিনি। আজ ৭২+ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয় তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়’।

অন্যদিকে, উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলামের বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে বলেন, ‘উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের দরকার আছে বলে মনে করি না। একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে এই সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের দরকার নেই।’

যাদের একাধিক দেশের পাসপোর্ট, নাগরিকত্ব নেওয়া তারাই আবার অন্যদের সেফ এক্সিটের তালিকা করে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, যাদের একাধিক দেশের পাসপোর্ট, নাগরিকত্ব নেওয়া তারাই আবার অন্যদের সেফ এক্সিটের তালিকা করে। যারা ৫ আগস্ট পালিয়েছিল তাদের সিমপ্যাথাইজাররা কষ্টে মরে যাচ্ছে। বারবার ফ্যাসিস্টদেরই পালাতে হবে। আমাদের জন্ম এদেশে মৃত্যুও এদেশের মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ। ফ্যাসিস্ট, খুনিদের সঙ্গে লড়তে লড়তে আমার ভাইদের মতো শহীদী মৃত্যু কামনা করি।