ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, রাজনৈতিক শক্তি ও অর্থনৈতিক শক্তির স্বার্থটা যখন এক হয়ে যায়, তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো অনেক কোম্পানি তৈরি হয়। দেশে ইতিমধ্যে ১০-১৫টা ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শুধু সম্পদ জব্দ করাই যথেষ্ট না, এই সম্পদ উদ্ধার করে সরকারের খাতায় নিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআই আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে মাসিক বিশ্লেষণ’ (এমএমআই) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পিআরআই নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এমসিসিআইর সভাপতি কামরান টি রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-বিআইজিডি ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান।
ফরাসউদ্দিন বলেন, ব্যাংক হিসাব জব্দ করা খুব বেশি ভালো কাজ নয়। ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখতে হলে এ বিষয়ে খুব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কোনো একজন কুলাঙ্গারের সম্পদ থেকে স্ত্রী-পুত্র-কন্যা যদি স্বাধীন থাকেন, তাহলে তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কী কারণ আছে। কিন্তু এটা হচ্ছে এবং এটা ভালো ফল দেবে বলে মনে করি না। এতে ব্যাংকের প্রতি আস্থা কমে যাবে। আমি সরকারকে বলব, ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়টি খুব সীমিত রাখতে হবে। ওই যে ১০-১৫ জন কুলাঙ্গারের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে এটি সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
বিগত সরকারের সময় দেশে খুব বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে উল্লেখ করে ফরাসউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমাদের নিরাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের পথ অনুসন্ধান নিজেদের করতে হবে। বর্তমান সরকার এখন পর্যন্ত সঠিক পথে রয়েছে। তাই খুব সাহসের সঙ্গে নীতি গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কর আদায় বাড়ানো।
ব্যাংকের পরিচালকদের নিয়ে ফরাসউদ্দিন বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একমাত্র কাজ হলো নীতিনির্ধারণ করা। কিন্তু বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যেখানে তারা কেবল ঋণ দিতে উৎসাহিত করে। এই ঋণ দেওয়া ও পরিচালকদের নীতি গ্রহণ কার্যক্রম আলাদা করার সুপারিশ করেন তিনি।