জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে দ্বিতীয় ধাপে ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, ফ্যাসিবাদী ও তার দোসরদের বিচার এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপের এ কর্মসূচি ঘোষণার করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
সরকারের প্রতি হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউনুছ আহমাদ বলেন, দেশের এতোগুলো রাজনৈতিক সংগঠন ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করার পরেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রকম ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কেমন যেনো স্বৈরতান্ত্রিক সরকারগুলোর মতো এই সরকারও জনতার দাবির প্রতি উদাসীনতা প্রদর্শন করছে। এই সরকার একমাত্র জনতার রক্তমাখা-জীবন উৎসর্গ করা অভিপ্রায়ে গঠিত। ফলে জনতার দাবির প্রতি ক্রমাগত উপেক্ষা এই সরকারের নৈতিক ও আইনগত বৈধতাকে নষ্ট করবে।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে ইউনুছ আহমাদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের ইস্যুতে আমরা সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ আলাপচারিতায় অংশ নিয়েছি।কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া “স্বৈরতন্ত্রের স্থায়ী বিলোপ” পূরণে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায় নাই। জুলাই সনদে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয় নাই, যে সব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোর আইনি ভিত্তি নিয়ে টানাপোড়েন এখনো শেষ হয় নাই। ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িতদের বিচারে ধীরগতি ও স্বল্পমাত্রা হতাশা তৈরি করেছে। পুলিশের হিসাবমতেই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত আটক হওয়া ব্যক্তিদের ৭৩ শতাংশ জামিন পেয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে যুগপৎ আন্দোলনের দাবিগুলো উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো- জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে, নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে, গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে, বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি জানান, ৫ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপে আমাদের কর্মসূচি হচ্ছে- ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ দফা গণদাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে গণসংযোগ, ১০ অক্টোরব ঢাকায় ও বিভাগীয় শহরে গণমিছিল, ১২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।