ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ | ৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম

সাকিবকে আর কখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলতে দেওয়া হবে না: ক্রীড়া উপদেষ্টা

সাকিবকে আর কখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলতে দেওয়া হবে না: ক্রীড়া উপদেষ্টা

সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে দীর্ঘ সময় শুধু বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই নয়, রাজত্ব করেছেন বিশ্ব ক্রিকেটেও। তবে এবার বোধহয় জাতীয় দলের জার্সিতে সাকিব অধ্যায় শেষ হয়ে এলো। কেননা  এবার যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া সরাসরি জানিয়ে দিলেন, আর কখনো বাংলাদেশ দলে খেলতে পারবেন না সাকিব।

তিনি বলেছেন, তাকে (সাকিবকে) বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের জার্সির পরিচয় বহন করতে দেওয়া এটা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব না। ইতোপূর্বে এটা আমি বিসিবিকে না বললেও এখন আমার বোর্ডের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে, সাকিব আল হাসান আর কখনো বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারবেন না।

গত দুই দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টের জেরে পাল্টাপাল্টি ভার্চুয়াল লড়াই চলছিল সাকিব ও আসিফের। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশের জনপ্রিয় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে  তারকা ক্রিকেটারকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। 

কেন এমন সিদ্ধান্ত, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘যতবার তিনি (সাকিব) দেশে আসার জন্য চেয়েছেন, খেলার জন্য চেয়েছেন, বলেছেন “আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। আমি শুধু এমপি ইলেকশনটা করেছি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি।” কিন্তু আসল সত্যটা তো হচ্ছে, তিনি আসলে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠেভাবে জড়িত, যার প্রমাণ আমরা পেলাম।’

প্রমাণ বলতে আসিফ মাহমুদ আসলে সাকিবের একটা ফেসবুক স্ট্যাটাসের কথা বুঝিয়েছেন। যে পোস্ট থেকে এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। মূলত গত রোববার রাত ৯টার দিকে ফেসবুকে গণঅভ্যুত্থানের পর পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নিজের একটা ছবি দিয়ে পোস্ট করে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান সাকিব। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন, আপা।’ মূলত, এই পোস্টের পর থেকেই সাকিব-আসিফের ভার্চুয়াল লড়াই শুরু হয়। 

এরপরই আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে লিখেন, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। বাট আই ওয়াজ রাইট। ইন্ড অব দ্য ডিসকাশন।’ সেই পোস্টের জবাবে সাকিব লিখেছিলেন, ‘যাক শেষমেশ কেউ একজন স্বীকার করে নিলেন যে তাঁর জন্য আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না, বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারলাম না!’

পরদিন বিকেলে ফের ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া দেন আসিফ, ‘ভাইয়া, আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল। আমি শুধু নির্বাচনটাই করেছিলাম, আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতিতে জড়িত হইনি। ইউ নো হু। যার হাত ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত, তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বোর্ডের কর্তারা একাধিকবার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে বললেও তা না করে বরং খুনিদের এনডোর্স করা ছাড়াও শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, মানি লন্ডারিং, ফিন্যান্সিয়াল ফ্রড করা কাউকে কেন শুধু ভালো ক্রিকেটার বলেই পুনর্বাসন করতে হবে? আইন সবার জন্য সমান, ফেস ইট।’

তবে এর আগে পেছনের ঘটনাও একটু মনে করা যাক। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময়কালে সাকিব ছিলেন দেশের বাইরে। এরপর আর দেশে ফিরতে পারেননি নৌকা প্রতীকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়া সাকিব। আরও অনেকের মতো সাকিবের নামেও হত্যা মামলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে, আছে দুদকের মামলাও।