ঢাকা, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ পৌষ ১৪৩২ | ১০ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম

ভারতীয় হয়েও পাবনার একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুখরঞ্জন!

ভারতীয় হয়েও পাবনার একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুখরঞ্জন!

ছবি : সংগৃহীত

পাবনা সদর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত একজন শিক্ষক ভারতীয় নাগরিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি চাকরিতে বহাল থেকে সরকারি বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন এবং জালিয়াতির মাধ্যমে শ্বশুরের নামে লিজ নেওয়া জমিও নিজের নামে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। অভিযুক্ত সুখরঞ্জন চক্রবর্তী পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র ও আধার কার্ড হিসেবে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদমের সূর্যসেন পল্লি, ৪৬৭ এলাকার নির্মল কুমারের ছেলে। বর্তমানে পাবনা শহরের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের পার্বতীগঞ্জ পাড়ার বাসিন্দা হিসেবে তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। সুখরঞ্জন চক্রবর্তীর ভারতীয় পরিচয়পত্রের তালিকাভুক্তির নাম্বার ০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭ এবং আধার কার্ডের নাম্বার ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুখ রঞ্জন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নাগরিক সেজে চাকরি করছেন, অথচ তার স্থায়ী বসবাস ও পরিবার রয়েছে ভারতে। ভারতে তিনি জমি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন এবং তার স্ত্রী ও বড় ছেলে সেখানেই বসবাস করেন। ছোট ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে নিয়ে তিনি পাবনায় থাকেন এবং মাঝে মাঝে ১৫ দিন থেকে এক মাস ছুটি নিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে সরকারি লিজ নেওয়া জমি নিজের নামে করে নেওয়ার জন্য পৌরসভা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে সুখরঞ্জনের শ্যালক সুমন কুমার রায় বলেন, আমার বাবা শহরের মুরগিপট্টিতে সরকারি জমি লিজ নিয়ে বসবাস করতেন। বাবার মারা যাওয়ার পর আমার মায়ের নামে লিজ দেওয়া হয়। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে না জানিয়ে শুধুমাত্র আমার বোনকে একমাত্র উত্তরসূরি বানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। এমনকি পৌরসভাতেও আমার একমাত্র বোনকে উত্তরসূরি বানিয়ে আবেদন দিয়েছেন। আমার বাড়িতে বসবাস করে এখন আমাকেই বাড়িছাড়া করার অপচেষ্টা করছেন তিনি। 

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর বলেন, আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে এবং আমরা প্রাথমিক কিছু কাগজপত্রও পেয়েছি। আমি সংশ্লিষ্টদের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি।শিগগিরই রিপোর্ট হাতে পাব এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অন্যদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। এসব বানানো কাগজপত্র। আমার স্ত্রী ও সন্তান ওর ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা করে ভারতে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে এখন আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি তাদের আনতে চেয়েছিলাম, আসেনি। তদন্ত হলে আমি সব বৈধ কাগজপত্র দেখাতে প্রস্তুত আছি।