ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ | ২ চৈত্র ১৪৩১ | ১৬ রমজান ১৪৪৬

ধর্ষণ মামলায় পাবনায় সাবেক এমপি কারাগারে

ধর্ষণ মামলায় পাবনায় সাবেক এমপি  কারাগারে

ফাইল ছবি

এক নারীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ওরফে ফারুককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক সামছুন্নাহারের আদালত এ নির্দেশ দেন।

এর আগে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন আরজু। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বাদীর বিয়েবিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করার সময় বাসায় প্রায় নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। তখন আত্মীয়স্বজন তাকে আবারও বিয়ের জন্য চাপ দেন। এক পর্যায়ে ২০০১ সালের শেষের দিকে চাচার মাধ্যমে আসামির (খন্দকার আজিজুল হক আরজু) সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে আসামি নিয়মিত বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং এক পর্যায়ে সফল হন। আসামি তাকে জানান, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন। প্রথম পক্ষের ছেলেসন্তানের প্রতি বাদীকে দুর্বল করেন।

এতে আরও বলা হয়, সামাজিক নির্ভরতা ও একাকিত্বের অবসানসহ নতুন সংসার শুরু করার মাধ্যমে বাদী আসামিকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে ফেলেন এবং বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হন। ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর আসামির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। সন্তান গর্ভে আসার পর আসামি বিভিন্ন ছলচাতুরীর মাধ্যমে নষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাদীর দৃঢ়তার জন্য তা করতে পারেননি। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আসামির আচার-আচরণে পরিবর্তন আসে এবং বাসায় আসা কমিয়ে দেন। বাদীর নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বললে তার বাবা ১০ লাখ টাকা, জমানো আট লাখ টাকা এবং ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার বিক্রি করে আসামিকে টাকা দিলেও তিনি কোনো ফ্ল্যাট কিনে দেননি এবং কোনো টাকাও ফেরত দেয়নি।

এক পর্যায়ে আসামি বাদীর বাসায় আসা বন্ধ করে দেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত, সেই ঘরে কন্যাসন্তান আছে এবং স্ত্রীর সংসারে বসবাস করতে শুরু করেন। আরও জানতে পারেন, বিবাদী এর আগে বাদীর কাছে নিজের নাম ফারুক হোসেন হিসেবে প্রচার করলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু। মিথ্যা তথ্য ও পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যই বাদীকে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। এরপর আসামি কয়েকবার নিজে ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে আসামি বাদীর সঙ্গে বিয়ে, গর্ভপাত ও ঔরসজাত কন্যার পিতৃপরিচয় সরাসরি অস্বীকার করেন। 

এ ঘটনায় গত বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী আদালতে মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আদেশ দেন। অভিযোগ তদন্তের পর ঢাকা মহানগর উত্তর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম ট্রাইব্যুনালে গত ৫ই জানুয়ারি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

 গত ১৬ই জানুযারি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক সামছুন্নাহার পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

এএইচ