ফের পছন্দের প্রতীকের তালিকায় পরিবর্তন এনে প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। এবার ‘লাল শাপলা’ বাদ দিয়ে সেই জায়গা ‘শাপলা কলি’ অন্তর্ভুক্ত করে তা পেতে আবেদন করেছে এনসিপি।
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এসে প্রতীক বরাদ্দের নতুন আবেদন করেন। এরআগে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল হক মুসা।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন,গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন শাপলা কলি সহ কয়েকটি প্রতীক যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এনসিপি ইসির তালিকা থেকে প্রতীক পছন্দ করে আজকে একটা আবেদন দিয়েছে। এরমধ্যে প্রথমে আছে শাপলা, দ্বিতীয়তে আছে সাদা শাপলা এবং তৃতীয় শাপলা কলি আছে। সেক্ষেত্রে শাপলা কলি পেলে এনসিপি মেনে নেব। নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারী আচরণ দেখেছে দেশের মানুষ।
নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা না করতে বিএনপি এবং জামায়াতকেও সর্তক করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বিএনপির চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এবং জামায়াতের ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের সঙ্গে এনসিপি যুক্ত হতে চায় না। এই দুই দল নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসলে জোটের চিন্তা করবে এনসিপি। ধানের শীষ আর শাপলা কলিতে হবে ফাইট। আমাদের দল থেকে তিনশ’ আসনেই প্রার্থী দেয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে নাসীরুদ্দীন বলেন, সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে গোপনে প্রেম করলে, গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত হবে। এ বিষয়ে সজাগ থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এনসিপি নেতা জহিরুল ইসলাম মুসা তাদের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা, সাদা শাপলা এবং শাপলা কলি’ বেছে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলি এখন আমাদের পছন্দ। এর জন্য আমরা আবেদন করেছি। এনসিপির প্রতীক শাপলা কলি বিবেচনায় নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে।
গত জুনে নিবন্ধন আবেদনের সময় শাপলার পাশাপাশি কলম ও মোবাইল ফোন চেয়েছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পরবর্তীতে দুই প্রতীক থেকে সরে এসে কেবল শাপলাতেই জোর দেয় দলটি। কমিশনে প্রতীক সংরক্ষণ কম থাকায় জুলাইয়ে ৪৬টি নতুন প্রতীক যুক্ত করে মোট ১১৫ টি প্রতীক ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তবে এই ১১৫টির মধ্যে শাপলা না থাকায় কঠোর অবস্থান নেয় এসসিপি। তবে রাজনৈতিক দলের জন্য তৈরি করা প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় এনসিপির আবেদন বারবারই নাকচ করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকলেও প্রতীক নিয়ে ইসির সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরেই টানাপোড়েন চলছে এনসিপির। এ নিয়ে দফায় দফায় চলে চিঠি চালাচালি, সাক্ষাৎ-বৈঠক। গত ১৯ অক্টোবর প্রতীক পছন্দের শেষ দিন ছিল। তবে সে সময়ও শাপলা ছাড়া অন্য প্রতীক নেবে না বলে জানায় এনসিপি। পরে গত ৩০ অক্টোবর প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে ইসি।