জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার লেখক রকিব হাসান আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর ১০ মাস।
বুধবার (১৫ অক্টোবর ) ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। কিডনির ডায়ালাইসিস চলাকালীন সময়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েছে বলে ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মূর। যিনি প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর জানান, রকিব হাসান নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতেন। প্রতি সপ্তাহে কয়েকবার তাকে হাসপাতালে নিতে হতো। বুধবারও নিয়মমতো ডায়ালাইসিসের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে হঠাৎ তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়, এবং সেখানেই বিকেল প্রায় ৪টার দিকে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। পারিবারিকভাবে রাতেই দাফনের পরিকল্পনা রয়েছে, তবে সময় ও স্থান এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রকিব হাসানের দাফন তাঁর স্ত্রীর কবরের পাশে হতে পারে বলে জানা গেছে।
রকিব হাসান ১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরির কারণে তার শৈশব কেটেছে ফেনীতে। রকিব হাসানের লেখকজীবন শুরু হয় সেবা প্রকাশনী থেকেই। প্রথমদিকে তিনি বিশ্বখ্যাত ক্লাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সহ প্রায় চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজ। মূলত রবার্ট আর্থারের ‘দ্য থ্রি ইনভেস্টিগেটরস’ সিরিজ অবলম্বনে লেখা হলেও, রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছিল সম্পূর্ণ নতুন, বাংলাদেশি আঙ্গিক। তাঁর হাতে এই সিরিজ কেবল অনুবাদ নয়, হয়ে উঠেছিল এক অনন্য সৃষ্টি—যা বাংলাদেশের কয়েক প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীর শৈশবের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন একাধিক ছদ্মনাম। ‘শামসুদ্দীন নওয়াব’ নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বিখ্যাত রচনাগুলো।