ঢাকা, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ পৌষ ১৪৩২ | ১০ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম

শারদীয় দুর্গাপূজার সপ্তমীতে চলছে দেবীদর্শন ও আরাধনা

শারদীয় দুর্গাপূজার সপ্তমীতে চলছে দেবীদর্শন ও আরাধনা

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আজ মহাসপ্তমী। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নবপত্রিকা প্রবেশ, ঘট স্থাপন, সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা। শাস্ত্র অনুযায়ী, মহাসপ্তমীর অন্যতম প্রধান আচার নবপত্রিকা স্থাপনের আচার শুরু হয়েছে আজ সকালে। দেবী এবার এসেছেন গজ বা হাতিতে চড়ে। হিন্দু শাস্ত্রমতে, এর অর্থ মর্ত্যলোক ভরে উঠবে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধিতে। দুর্গা যাবেন দোলায় চড়ে।

দুর্গোৎসবকে ঘিরে রমনা কালীমন্দির প্রাঙ্গণে শাখা-সিঁদুর, পূজার বিভিন্ন উপাচারসহ নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। উপস্থিত হয়েছেন খাবারের বিক্রেতারাও। তবে দুপুরে দেখা গেল, এসব দোকানের চেয়ে মূল মন্দিরের সামনেই ভক্তদের ভিড় বেশি। ভক্তরা জানন, সপ্তমীতে নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে স্নান করানো হয়েছে। দুর্গাপ্রতিমার সামনে একটি দর্পণ বা আয়না রেখে সেই দর্পণে প্রতিফলিত প্রতিমার প্রতিবিম্বে বিভিন্ন উপচারে দেবীকে এই স্নান করানো হয়।

রমনা কালীমন্দিরের প্রধান পুরোহিত হরিচাঁদ চক্রবর্তী জানান, সপ্তমীর পূজা শেষ হয়েছে সকালে। সপ্তমীতে দেবী বিল্বপত্র থেকে মন্দিরে প্রবেশ করেছেন। ‘দুষ্টের দমন, সৃষ্টের পালন’ এই বাসনা নিয়ে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভশক্তির জয়ের আকুতি জানিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সপ্তমীতে দুর্গতিনাশিনী দেবীর কাছে প্রার্থনা জানাচ্ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

রমনা কালীমন্দিরের চত্বরে পূজা কমিটির আহ্বায়ক তপন কুমার বসু বলেন, আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে। ষষ্ঠীতে মা আসনে বসেছেন। সপ্তমীতে ঘট স্থাপন করা হয়েছে। এবারের নিরাপত্তাব্যবস্থা যথেষ্ট ভালো। মানুষ নির্বিঘ্নে মন্দিরে যাচ্ছে, দেবীদর্শন করছে।

পঞ্চমীতে বোধন এবং ষষ্ঠী তিথিতে আমন্ত্রণ—অধিবাস ও ষষ্ঠী বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ‘মহাসপ্তমী’, ‘মহাঅষ্টমী’ ও ‘মহানবমী’ পূজা শেষে ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ‘মহাদশমী’ পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আগামীকাল মঙ্গলবার মহাঅষ্টমী।

এবার চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৯২টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়া জেলায় দুর্গাপূজা মণ্ডপের সংখ্যা ১ হাজার ৬১৪টি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে নির্বিঘ্ন করতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। পূজা উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টা করে পাঁচদিন সকল ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নগর পুলিশ। তবে আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহনে যুক্ত যানবাহনগুলো এর আওতামুক্ত থাকবে। দুর্গাপূজায় পূজারী, দর্শনার্থী ও সাধারণ নাগরিকদের নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করতে এবং যানজট এড়াতে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।