ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২ | ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

অগ্নিঝরা মার্চ : ১৩ মার্চ ১৯৭১

অগ্নিঝরা মার্চ : ১৩ মার্চ ১৯৭১

গ্লোবাল টিভি ছবি

১৩ মার্চ, ১৯৭১। লাখো মুক্তিকামী বাঙালির উত্তাল আন্দোলন-সংগ্রাম ও সশস্ত্র প্রস্তুতিতে শঙ্কিত হয়ে পড়েন পাকিস্তানী সামরিক জান্তারা। বিরোধী দলের নেতারা পাকিস্তানের অনিবার্য ভাঙন বুঝতে পেরে জরুরী বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে অবিলম্বে শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম দমনে নিষ্ঠুর পরিকল্পনা নিতে থাকে হানাদাররা। 
একাত্তরের মার্চ মাসে যত দিন গড়াচ্ছিল, স্বাধীনতাকামী বাঙালির ঐক্য ততই সুদৃঢ় হচ্ছিল। তখনকার চলমান অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়, প্রত্যয়দৃঢ় একাত্মতা ঘোষণা করছিল স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন। পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্খায় আন্দোলন-সংগ্রামে মুখর জনপদ। প্রতিটি গৃহে ও ভবনের শীর্ষে উড়ছে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা আর কালো পতাকা। অবিরাম চলছে সভা-শোকসভা। অসহযোগ আন্দোলনের এক সপ্তাহ পর দেশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষকসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানী সামরিক শাসকরা বাংলার দামাল ছেলেদের এ আন্দোলন দেখে চিন্তিত হয়ে পড়ে।

এদিন বিশিষ্ট শিল্পী জয়নুল আবেদিন ও সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য আবদুল হাকিম পাকিস্তান সরকার প্রদত্ত খেতাব ও পদক বর্জন করেন। ঢাকার জাতিসংঘ ও পশ্চিম জার্মান দূতাবাসের কর্মচারী ও এদের পরিবারবর্গসহ ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার ২৬৫ জন নাগরিক বিশেষ বিমানে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। ভৈরবে এক জনসভায় ন্যাপপ্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, বর্তমানে পূর্ব বাংলা স্বাধীন। আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ সরকার গঠনের অপেক্ষায় আছি। 

তিনি খাজনা প্রদান বন্ধ রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।