সংগৃহীত ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদের দুই ভাই বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
শহিদ আবু সাঈদের দুই ভাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসকে তাদের পিতামাতার সালাম এবং শুভকামনা পৌঁছে দেন।
তারা বলেন, গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অধ্যাপক ইউনূস যখন তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে আবু সাঈদ ও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের অন্য শহিদদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করেন, তখন শহিদ আবু সাঈদের বাবা-মাসহ সবাই আবেগে সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী অধ্যাপক ইউনুসকে বলেন, আপনি প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার একদিন পর রংপরে আমাদের গ্রামে গিয়ে আমাদের সাথে দেখা করেছেন এবং আপনি জাতিসংঘে তাবু সাঈদসহ বিপ্লবের শহিদদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছেন এজন্য আমরা অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করেছি।
প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেয়। এসময় দুই ভাই অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে একই মঞ্চে ছিলেন।
শহিদ আবু সাঈদের অপর ভাই আবু হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সাথে যখন আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদেরকে স্যালুট দিয়ে সম্মান জানায়, তখন আমাদের কেমন লেগেছিল, তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে তারা আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
দুই ভাই তাদের শহিদ ভাইয়ের নামে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করবেন উল্লেখ করে বলেন, তারা তাদের শহিদ ভাইয়ের স্মরণে তাদের গ্রামে একটি 'মডেল মসজিদ' এবং একটি মেডিকেল কলেজ প্রত্ষ্ঠিা করতে চান এবং তারা এ বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছেন।
আবু হোসেন বলেন, 'এ ফাউন্ডেশন দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কাজ করবে।'
অধ্যাপক ইউনূস আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে তার হত্যার তদন্ত দ্রুত শেষ করার এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি বলেন, 'শহিদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছে।'
তিনি তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, তাদের জন্য তাঁর দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
তিনি দুই ভাইকে তাদের বাবা-মাকে তাঁর সালাম পৌঁছে দিতে বলেন এবং সবসময় তাদের সাথে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে বুক পেতে দিয়ে শহিদ হন।