গ্লোবাল টিভি ছবি
মিজানুর রহমান, সুনামগঞ্জ : স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার অফিস সহকারী দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। প্রতিমাসে একবার অফিসে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান তিনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস না পেলেও সরকার পতনের পর এখন আলোচনায় অফিস সহকারী হুসনা।
জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে সদর উপজেলা থেকে দোয়ারাবাজরে বদলী হলেও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করতেন তিনি।
২০০৪ সালের অক্টোবর মাসে অফিস সহকারী হিসাবে সদর উপজেলা এলজিইডি অফিসে যোগদান করেন তিনি। ২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করেন তিনি। এদিকে ২০১২ সালে সদর উপজেলা থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলায় অফিস সহকারী হিসাবে যোগদান করেন তিনি। সেখানে ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কাগজে কলমে দ্বায়িত্ব পালন করলেও বাস্তবে দীর্ঘ ১১ বছরে মাত্র ২-৩ বার অফিস করেছেন তিনি। দোয়ারাবাজারে বদলী হলেও আলৌকিক ক্ষমতাবলে সদরে থেকেই নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করতেন।
এদিকে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ফের তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় বদলী হন। এখানে যোগদানের পরেও নিয়মিত কর্মস্থলে না আসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে সদর উপজেলা অফিসে গিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত দেখা যায় ওই কর্মচারীকে। এমনকি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ছিলো না। সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবরে তড়িগড়ি অফিসে ছুটে আসেন তিনি। তিনি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের অফিস রুমে আসলে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিয়মিত অফিসে আসি। সকালে উপজেলা অফিসে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে ঘন্টাখানেক সময় দিয়ে জেলা এলজিইডি অফিসে গিয়ে অফিসিয়াল দায়িত্ব পালন করি।
দোয়ারাবাজার উপজেলায় দীর্ঘ ১১ বছর চাকরী করলেও মাত্র দুই থেকে তিনদিন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন বলে তিনি স্বীকার করেন। সদর উপজেলায় থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলা শাখা থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করতেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি। সুনামগঞ্জ এলজিইডি অফিসের অর্ডারে তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরেই একই জায়গায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। দোয়ারাবাজার উপজেলায় একবার বদলী হলেও একই কারনে ওই কর্মস্থলে আর যোগদান করতে হয়নি তাকে।
এদিকে তার ছত্রছায়ায় দিনমজুর থেকে নামিদামি ঠিকাদার হয়ে উঠেছেন তার স্বামী বিল্লাল। স্থানীয় প্রভাব ও উপর মহলের সাথে যোগসাজশ থাকায় সহজেই হাতিয়ে নিতেন এলজিইডির আওতায় আনা নানা প্রকল্পের কাজ। অল্প সময়ে আঙুল ফলে কলাগাছ হয়ে উঠেছেন। গড়ে তোলেছেন আলীশান বাড়ি।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, অফিস সহকারী হুসনা আক্তার নিয়মিত কর্মস্থলে আসেন। উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগ থাকলেও সদর এলজিইডি অফিসে যে কেউ দায়িত্ব পালন করতে পারবে।