ছবি: বাসস
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পণ্যের বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য, গালফ, আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন বাজার লক্ষ্য করে রপ্তানি বৃদ্ধি করে আয় বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা অল্প কিছু রপ্তানি পণ্যের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে। তাই আমাদের রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী রবিবার সকালে রাজধানীর ওসামানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৩২টি ক্যাটাগরিতে ৭৭ রপ্তানিকারকের মাঝে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বলেন, আমি আপনাদের আর একটি কথা বলবো আসলে যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ে ইউরোপীয় দেশগুলো কিংবা আমেরিকাই বলেন, তাদের মূল্যস্কীতি বেশি এবং অর্থনীতি কিন্তু খুব চাপের মুখে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমাদের কিন্তু নতুন সুযোগ আছে। মিডলইস্ট, গালফ কান্ট্রি, আফ্রিকা, সাউথ এশিয়া, সাউথ ইস্ট এশিয়া, ইস্ট এশিয়ান কান্ট্রিগুলো, ইস্ট ইউরোপীয় কান্ট্রিগুলো এদের সাথে যত বেশি আমরা আমাদের যোগাযোগ রাখতে পারবো, আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে পারবো। এই সুযোগটা আমাদের নিতে হবে। এজন্য আমরা ইতোমধ্যে কাজ করছি। মাঝে মাঝে প্রতিনিধিও পাঠাচ্ছি এসব জায়গায়।
তিনি বলেন, আমাদের নতুন নতুন জায়গা এবং নতুন নতুন পণ্য খুঁজতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা কেবল আরএমজি পণ্যের ওপরই নির্ভরশীল থাকবো কেন? ট্রেন্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের পোশাকের ডিজাইনগুলো পরিবর্তন করতে হবে। সরকার এজন্য বেসরকারি খাতের সহায়তায় ফ্যাশন ডিজাইন বিশ^বিদ্যালয় করেছে কেননা এক্ষেত্রে গবেষণারও প্রয়োজন রয়েছে।
বর্তমান যুগ ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির যুগ এবং সেভাবেই বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে তাঁর নির্দেশ দেওয়া রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন দেশের বাজারে আমরা ঢুকতে পারবো। সেটা সরকারের পক্ষ থেকেও আমরা করবো কিন্তু ব্যবসায়ীদেরকেও নিজেদের পার্টনার নিজেদেরকে খুঁজে নিতে হবে। সেদিকেও আপনাদের নিজেদের দৃষ্টি দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেদের উৎপাদন যেমন বাড়াবো, রপ্তানিও বাড়াবো আবার দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়িয়ে অর্থনৈতিকভাবেও আমরা এগিয়ে যাব।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘরে ঘরে ইন্টারনেট, ছেলে মেয়েদের জন্য কম্পিউটার ট্রেনিং ও কম্পিউটার ইনকিউবেশন সেন্টার করে দিয়ে কারিগরি শিক্ষা ও ভোকেশনাল ট্রেনিংকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। ৪র্থ শিল্প বিপ্লব যখন আসবে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের জনশক্তি তৈরী করা-এটাও আমাদের জন্য প্রয়োজন।
তিনি বলেন, স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়ে এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা হিসেবে আমাদের যুব সমাজ যাতে এগিয়ে আসে। এজন্য ‘কোম্পানী আইন’ সংশোধন করে সরকার ‘ওয়ান ম্যান কোম্পানী’ করার ব্যবস্থাও করে দিয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনে নারীদের জন্য উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সরকার ১শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে সেখানে নারীরা চাইলে আলাদা ভাবে প্লট নিয়ে নিজের ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারবে। কারণ, আমি চাই আমাদের সমাজে মেয়েরাও এগিয়ে আসুক এবং তারাও এই ব্যবসা-বাণিজ্যে যুক্ত হোক, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সরকারের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি।