ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫ | ৭ মাঘ ১৪৩১ | ২০ রজব ১৪৪৬

অগ্নিঝরা মার্চ: ৩০ মার্চ ১৯৭১

অগ্নিঝরা মার্চ: ৩০ মার্চ ১৯৭১

গ্লোবাল টিভি ছবি

আজ ৩০ মার্চ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকে পাকবাহিনীরা সারাদেশে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। দেশবাসী দেশের বিভিন্ন স্থানে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে থাকে।

১৯৭১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের লালখান বাজারে বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী ও বিহারী এবং রাজাকাররা মিলে হত্যা করে প্রায় আড়াই হাজার বাঙালী। ‘ওয়াসার মোড়ের কল হতে পানি দেওয়া হচ্ছে’ এমন প্রতারণামূলক গুজব রটিয়ে জড়ো করা হয় বাঙালীদের। এরপর হানাদার সেনারা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে শত শত বাঙালীকে। এরপর ওই দিন দুপুর থেকে বাঙালী দেখা মাত্রই গুলি করে হত্যা করতে থাকে হানাদাররা। রাতেই চলে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষ হত্যা। চট্টগ্রামের লালখান পুরো মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে।

৩০ মার্চ দিন নাটোরের লালপুরে ‘ময়নার যুদ্ধে’ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সুদৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলে সাঁওতাল ও বাঙালীরা। এই সম্মুখ যুদ্ধে সাঁওতাল তীরন্দাজসহ ৪০ জন বাঙালী শহীদ হন। সেদিন মুক্তিপাগল জনতা, তৎকালীন ইপিআর ও আনসার বাহিনীর হাতে পর্যুদস্ত হয় ২৫ নং পাঞ্জাব রেজিমেন্ট।

এই দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ভারতের পার্লামেন্টে বলেন, “পূর্ব বঙ্গের সাড়ে সাত কোটি লোক তাদের স্বাধীনতার জন্য যে সংগ্রাম শুরু করেছেন, ভারত তাকে সাহায্য না করে পারে না। ভারত তাই সংগ্রামে সাহায্য করেই যাবে।”

'একাত্তরের দিনগুলি’ বইয়ে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ৩০ মার্চ সম্পর্কে লিখেছেন— “সুফিয়া কামাল আপা, নীলিমা ইব্রাহিম আপা বেঁচে আছেন। কলকাতা রেডিওতে ভুল খবর দিয়েছে। খবরটা জেনে মনটা খুব ভাল হল।”

অবস্থা বেগতিক দেখে দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ৩০ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে আবারও ঘোষণা দেন, ‘পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, বিমান ও নৌবাহিনী বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত আক্রমণ শুরু করেছে এবং নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে।’ তিনি তাঁর ঘোষণায় বলেন, ‘আমি এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ এবং আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য আবারও জাতিসংঘ ও বৃহৎ শক্তিবর্গের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। বিলম্ব করা হলে আরও লাখ লাখ লোক নির্মম হত্যার শিকার হবে।’