ঢাকা, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নোয়াখালী-৫ আসনে আওয়ামী লীগে ওবায়দুল কাদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী

নোয়াখালী-৫ আসনে আওয়ামী লীগে ওবায়দুল কাদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী

ছবি: গ্লোবাল টিভি

আবু রায়হান সরকার, নোয়াখালী: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসনটিকে ভিআইপি আসন হিসেবে ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা ওবায়দুল কাদের এ আসনে একক প্রার্থী তা অনেকটাই চূড়ান্ত। 

এটি জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত। দুই উপজেলার মোট ১৫টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে এ নির্বাচনি আসনের পরিধি। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১৩ হাজার ৭১৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১০ হাজার ৩৮৮। নারী ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৩২৭।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে এ আসনে প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে এবং সুসংগঠিত। অপরদিকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুর পর বিএনপি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দলীয় কোন্দল চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিএনপির দলীয় কোন্দল না মেটাতে পারলে আগামী নির্বাচনে চরম খেসারত দিতে হবে দলটিকে। আর জাতীয় পার্টিকে নোয়াখালী-৫ আসনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য একক প্রার্থী হিসেবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেনও মাঠে সক্রিয়।

আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও এ আসনে আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদেরের মনোনয়ন অনেকটা চূড়ান্ত। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯৬ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হয়েই সরকারে যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১১ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এ ছাড়া তিনি পরপর তিনবার দেশের প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে উপজেলা, পৌরসভা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন এবং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে আমরা শতভাগ নিশ্চিত এ সংসদীয় আসনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব। বিএনপিকে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি না। এখানে বিএনপির যে বা যারা প্রার্থী আছে সেসব প্রার্থীর কোনো যোগ্যতা নেই আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার। নোয়াখালী-৫ আসনে আমাদের গ্যাসের সমস্যা ছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই। 

জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার শাসন আমলে এ আসনে এমপি ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি একাধিক সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সে সুবাদে তিনি এলাকার অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তার মৃত্যুর পর তার সহধর্মিণী হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে এ আসনে এমপি পদপ্রার্থী। হাসনা মওদুদ এরশাদ সরকারের সময় এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, আমাদের নেতা মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ক্ষমতায় থাকাকালে নোয়াখালী-৫ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা মওদুদ অহমদের সহধর্মিণী বেগম হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদের নেতৃত্বে নোয়াখালী-৫ আসনে আমরা ঐক্যবদ্ধ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হবেন। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা ও নোয়াখালী-৫ আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ঢাকা মেট্রো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, এ সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে। সে নির্বাচনে আমি ধানের শীষ মার্কা প্রতীকে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব। 

জাতীয় পার্টির এমপি প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমদ বলেন, এখন আমরা কোনো জোটে নেই। বরং আমরাই জোট গঠন করছি। আমরা আমাদের নেতা জিএম কাদেরের নেতৃত্বে আছি। তিনি এ আসনে আমাকে এমপি প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। নেতার নির্দেশ অনুযায়ী আমি কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে নির্বাচন করব। 

তিনি আরও বলেন, নোয়াখালী-৫ আসন ভিআইপি আসন। এ আসনে এক সময়ে নেতৃত্বে দিয়েছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এখানে আমি একেবারেই নবীন। আমি ওনাদের কাছ থেকে শিখছি। কিন্তু তাদের তো বয়স হয়ে গেছে, শারীরিকভাবে অসুস্থ। এখন নবীনদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।