ঢাকা, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

নোয়াখালী-১ আসনে আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী

নোয়াখালী-১ আসনে আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী

ছবি: গ্লোবাল টিভি

আবু রায়হান সরকার, নোয়াখালী: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনে শুরু হয়েছে নির্বাচনী উৎসব আমেজ। প্রার্থিতা জানান দিতে নির্বাচনী মতবিনিময় সভা,গণসংযোগ এবং এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে মাঠে নেই বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা। 

জানা যায়, চাটখিল ও সোনাইমুড়ী উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত নোয়াখালী-১ আসন। চাটখিল উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং সোনাইমুড়ী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫১৭ জন ভোটার রয়েছেন।স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে ১৯৭৩ ও ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেলায়েত এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে এ আসনটি বিএনপি প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের (১৫ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনে অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন কামরান, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান এবং ২০০৮ সালে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। টানা ৫ বার এই আসনে বিজয়ী হয় বিএনপি। এরপর দীর্ঘ দুই যুগ পর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এ আসনটি পুনরুদ্ধার করে আওয়ামীলীগ।

এবারও এ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম আসন্ন নির্বাচনে আসনটি পেতে চান। তবে এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম ২০১৮ সালে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এবারও দলীয় টিকিট চাইবেন তিনি। এ লক্ষ্যে তিনিও বিভিন্ন ইউনিয়নে ভোটারদের কাছে প্রচার চালাচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবিরও প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে তিনি প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আরও আছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ব্যবসায়ী ড. মোহাম্মদ ফারুক, আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার রুহুল আমিন ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস।

অন্যদিকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন এবং দলীয় সিদ্ধান্ত না থাকায় মাঠে নেই বিএনপি ও জামায়াতের কোনো নির্বাচনী তৎপরতা। তবে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদের নাম শোনা যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টি থেকে আবদুর রহিম বিশ্বাস ও জামায়াতে ইসলামী থেকে মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি এলাকায় মানুষের কল্যাণে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ করেছি,এলাকার উন্নয়ন করেছি।সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি। অবহেলিত জনপথ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের জোয়ার বইছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে এই আসনে বিজয়ী হব।

নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম বলেন, আগে এ আসনকে বিএনপির ঘাঁটি বলা হলেও এখন আর নেই। এখন এ আসনে জনগণের সমর্থনে আওয়ামী লীগ শক্ত অবস্থানে আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমি তার আস্থা ও বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে জনগণের মন জয় করার জন্য কাজ করেছি। আশা করি এবারও নেত্রী আমার ওপর আস্থা রাখবেন।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, নোয়াখালীতে বিএনপির ঘাঁটি আরও শক্ত হয়েছে। আগের চেয়ে বিএনপির সমর্থন আরও বেড়েছে। ব্যারিস্টার খোকন দলের দুঃসময়ে সুপ্রিম কোর্টে দলের নেতা-কর্মীদের আইনগত সহায়তা দিয়ে আসছেন। বেগম খালেদা জিয়া ওনাকে পছন্দ করেন। তাই আশা করি দলের মনোনয়ন পেয়ে তিনি এই আসনে বিজয়ী হবেন।