ছবি: গ্লোবাল টিভি
সোহেল রানা বাবু, বাগেরহাট: বাঘ জরিপের দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের চত্বরে এবার এসে হাজির হয়েছে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সরাসরি শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসানের বাস ভবনের দরজার সামনে আসে বাঘটি। প্রথমে রেঞ্জ কর্মকর্তার স্ত্রী ও মেয়ে বাঘটি দেখতে পেয়ে বাসভবনে দরজা আটকিয়ে চিৎকার দিতে থাকে। এসময়ে রেঞ্জ অফিস চত্বরে বিচরণ করা হরিণের পালে আক্রমণ করে বাঘটি। হরিণ শিকার করতে ব্যর্থ হয়ে প্রায় ১৫ মিনিট পর সুন্দবনের এই রাজকীয় প্রানীটি হেলে-দুলে রেঞ্জ অফিসের পুকুর পাড়ে গিয়ে ১২টা পর্যন্ত অবস্থান করে।
এর আগে ৭ অক্টোবর রাতে ধানসাগর ফরেস্ট স্টেশন অফিসের বনরক্ষীদের ব্যারাকের সামনে দুটি বাঘ দেখা গেছে। ৮ আগস্ট সকালে কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের বনরক্ষীদের ব্যারাকের খুব কাছে চলে আসে বিশাল এক রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এসময় মোবাইলে বাঘটির ভিডিও ধারণ করেন বনরক্ষীরা। এছাড়া গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রেঞ্জের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি অফিসের পুকুর পাড়ে দেখা মেলে জোড়া বাঘের। একদিন-একরাত (প্রায় ২২ ঘন্টা) সেখানে অবস্থান করে বাঘ দুটি আবার বনে ফিরে যায়।
সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান জানান, পূর্ব সুন্দরবনে শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে এই সাথে ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ে বাঘ গণনা। দুই রেঞ্জে চলছে ক্যামেরা বসানোর কাজ। শরণখোলা রেঞ্জে ক্যামেরা বসানো শুরু হলে রেঞ্জ অফিসের কাছে একটি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য বলা হবে সংশ্লিষ্টদের। এর মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের চত্বরেই হাজির হয়েছে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এসময় নানাভাবে শব্দ করার পর বাঘটি তাড়িয়ে দেয়া হয়। বাঘটি বনে চলে যাওয়ার সময় এক বনক্ষী টর্চলাইট মেরে মোবাইলে ভিডিও করার চেষ্টা করলেও তা স্পষ্ট হয়নি।
বাঘ দেখার পর থেকে রাতে কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। সন্ধ্যার পরে কোনো বনরক্ষীকে একা বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নূরুল করিম জানান, শরণখোলা রেঞ্জ অফিসটির পূর্ব পাশ থেকেই গহীন বন এবং পশ্চিম পাশে ভোলা নদী। তাই পূর্ব পাশ থেকেই বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন পন্যপ্রাণি অফিস চত্বরে সহজেই প্রবেশ করে। পূর্ব পাশের পৌনে এক কিলোমিটার এলাকা যদি কাটাতারের বেড়া দিয়ে আটকানো যায় তাহলে আর কোনো বাঘ ঢুকতে পারবে না, নিরাপদ থাকবে কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীরা।