ছবি: গ্লোবাল টিভি
মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর: নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও শেরপুরে ঝিনাইগাতীতে তিন বছরেও শেষ হয়নি প্রধানমন্ত্রীর অর্থায়নে নৃ-গোষ্ঠিদের ঘরের কাজ। ভুক্তভোগীরা এ নিয়ে বারংবার উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও স্থানীয় প্রশাসন নিচ্ছে না প্রয়োজনীয় কোন উদ্যোগ। ফলে বিপাকে পড়েছে ঘরপ্রাপ্ত হত-দরিদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির পরিবারগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্বত্য অঞ্চল ব্যতিত দেশের সমতলে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়েনর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী সেল কর্তৃক অর্থায়নে ২০১৯-২০-২১ অর্থ বছরে গৃহহীন, দুঃস্থ ও অসহায় পরিবারের মধ্যে গৃহ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০২০ সালে শেরপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার নৃ-গোষ্ঠীর গৃহহীন, দুঃস্থ ও অসহায় বেশ কিছু পরিবারের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হয় সেমি পাকা ঘর। সরকার কর্তৃক সে সময় প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ছিল ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। উপজেলা প্রশাসন ঘরগুলো নির্মাণের কাজ দেয় উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মি. নবেশ খকশীকে। সেই সাথে ওই নেতাকে ঘর নির্মাণের সমুদয় অর্থও বুঝিয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রায় তিন বছর গত হলেও এখনও শেষ হয়নি ৮টি ঘরের কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরগুলোর ফ্লোর ঢালাই, বাথরুম, জানালা, দরজাসহ কোন কোন ঘরের প্লাস্টারেরও কোন কাজ করা হয়নি।
উপজেলার নয়া রাংটিয়া গ্রামের রিতা মনি কোচ, হিন্দু পাড়ার রঞ্জন চন্দ্র বর্মণ, ডেফলাই গ্রামের তৃষ্ণা দিও, ধানশাইল চকপাড়া গ্রামের সমলা ম্রং জানান, ঘরের অর্ধেক কাজ শেষ হতে না হতেই বন্ধ নির্মাণকাজ। এরপর থেকে আমরা উপজেলা প্রশাসন ও ‘আদিবাসী নেতা’র পিছে ঘুরে আজ পর্যন্ত কোন ফল পাচ্ছি না। অপরদিকে উপজেলা প্রশাসন বা ওই নেতাও এখন আমাদের কথার কোন পাত্তা দিচ্ছে না। এখন আমরা অসমাপ্ত ঘরে না পারছি থাকতে, না পারছি বাকী কাজ সম্পন্ন করতে। তাই আমরা এখন মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নবেশ খকশীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতিটি ঘরের কাজে ২৭ হাজার টাকা লোকসান হওয়াতে কাজটি করতে দেরি হচ্ছে। ব্র্যাক থেকে লোন নিয়ে বাকী কাজ সম্পন্ন করে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ ফারুক আল মাসদ বলেন, কাজটি আমার আমলে নয়। তারপরেও আমি ওই ‘আদিবাসী নেতা’কে অল্প সময়ের মধ্যে অসমাপ্ত ঘরগুলোর কাজ সম্পন্ন করে দিতে নির্দেশ দিয়েছি।