ঢাকা, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নরসিংদীর সাবেক এমপির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

নরসিংদীর সাবেক এমপির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

ছবি: সংগৃহীত

মো. শফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী: নরসিংদী-২ পলাশ আসনের সাবেক এমপি পলাশ উপজেলার আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি কামরুল আশরাফ খানের (পোটনের) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) অনুসন্ধান চলছে। ৭২ হাজার টন সার আত্মসাৎ করে সরকারের ৫৮২ কোটি টাকা ক্ষতি করার অভিযোগে দুদক তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে। 

অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এবার অভিযোগ সংক্রান্ত নথিপত্র চেয়ে ঢাকা ব্যাংক ও মধুমতি ব্যাংকের ম্যানেজারকে চিঠি দিয়েছে দুদক। সোমবার (২৯ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে চাহিদাকৃত নথিপত্র আজ ১ জুনের মধ্যে জমা দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে ব্যাংক গ্যারান্টিসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চেয়ে মধুমতি ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংকের মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপককে চিঠি দিয়েছে দুদকের অনুসন্ধান টিম। টিমের প্রধান উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামানের সই করা চিঠিতে অভিযোগের অনুসন্ধানের স্বার্থে ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো যাচাইপূর্বক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে দুদকে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে একই ঘটনা অনুসন্ধানে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) কাছে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে গত ৪ এপ্রিল চিঠি দিয়েছিল দুদক। যার বেশকিছু নথিপত্র দুদকে এসেছে বলে জানা গেছে। কৃষকের কাছে ন্যায্যমূল্যে ও সঠিক সময়ে সার পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি করে সরকার। অভিযোগ উঠেছে, এর মধ্যে ৭২ হাজার টন সার আত্মসাৎ করেছে সাবেক এমপি পোটনের মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স। এ ঘটনায় সরকারের প্রায় ৫৮২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে বিসিআইসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। সার আত্মসাতের বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনা হলে অধিকতর অনুসন্ধানের জন্য চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি দুদককে নির্দেশ দেন আদালত। হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর এ অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। 

গত ২৯ মার্চ দুদকের উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে সাবেক এমপি ও পোটন ট্রেডার্সের মালিক কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) কাছে জানতে চাইলে তিনি  বলেন, বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। 

দুদক পরিচালক আবুল হাসনাত মো. আবদুল ওয়াদুদের সই করা চিঠিতে অনুসন্ধানের নির্দেশনার বিষয়টি জানানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ নিয়ে গত ৫ জানুয়ারি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে গত ৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগ স্বপ্রণোদিত রুল ইস্যু করেন। একই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে আগামী ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান সম্পন্ন করে আদালতে দাখিলের জন্য দুদককে নির্দেশ প্রদান করেন।