ঢাকা, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

মুন্সিগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

মুন্সিগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

ছবি: গ্লোবাল টিভি

মো: রাজিবুল হাসান জুয়েল, মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়নের পদ্মার চরে এ বছর বিপুল পরিমাণে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকেরা। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। তাই সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। 

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপর্যুপরি কয়েক বছর ধরে আলু চাষ করে লোকসান দিচ্ছিলেন তারা। চলতি বছর ৩৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ৪ হাজার কৃষককে দেয়া হয়েছে প্রণোদনাও। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭০ হেক্টর বেশি অর্থাৎ মোট ৪৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কলমার ৩০০ হেক্টর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলেই সরিষার আবাদ হয়েছে। 

সর্ষের ক্ষেতগুলোকে দেখলে মনে হয় হলুদের বন। চোখ ফেরানো দায়। কিছু কিছু জমির সরিষা গাছের হলদে ফুল ঝরে দানায় পরিণত হয়েছে। সেখানে আবার হলুদের সর্ষে বন সবুজ বনে রূপ নিয়েছে। দানা বেঁধে রূপ নেওয়া সবুজ রঙের সর্ষে বনের দিকে তাকালে চোখ ও মন দুটোই জড়িয়ে যায়। কৃষকেরা সরিষার এমন আবাদে মহা খুশি। তারা এখন দিন গুনছেন পাকা সরিষা ঘরে তোলার।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৪ হাজার সরিষা চাষিকে প্রণোদনা হিসেবে ১ কেজি করে বীজ, ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল বারি ১৪ ও বারি ১৭ এবং বিনা ৪ ও বিনা ৯ জাতের সরিষা আবাদ করে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। ফলন বাড়াতে মাঠ সহকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলনও হয়েছে ভালো।

লৌহজং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলার কৃষকেরা মূলত আলুর আবাদ করে থাকেন। কিন্তু আলুর চাহিদা ও দাম দিন দিন কমে যাওয়ায় এবং বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ক্রমাগত কয়েক বছর ধরে তারা লোকসান গুনছেন। বিষয়টি অনুধাবন করে আমরা কৃষকদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। কারণ, এতে খরচ কম লাভ বেশি। উৎপাদনের ৮০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে ঘরে সরিষা তোলা যায়। প্রতি বিঘা সরিষা আবাদে কৃষকদের ৪-৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি জমিতে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। ৪ হাজার টাকা মণ হিসেবে খরচ বাদে কৃষকদের প্রতি বিঘায় ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ হবে। তিনি আরও জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এ উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কিন্তু চলতি বছরে আবাদ হয়েছে ৪৫০ হেক্টর অর্থাৎ আগের চেয়ে তিনগুণ। লৌহজংয়ের পদ্মার চরে ৩শ হেক্টর জমিতে প্রায় ৪৫০ মেট্রিক টন সরিষার উৎপাদন হবে এবং তা থেকে ১৫০ মেট্রিক টন খাঁটি সরিষার তেল পাওয়া যাবে। এর বাজারমূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা।

এএইচ