ছবি: গ্লোবাল টিভি
রাব্বি আহমেদ, মেহেরপুরঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আমতৈল গ্রামের সুত্রধর সফর আলী। মুক্তিযুদ্ধ দেখার সৌভাগ্য তার হয়নি। দেখেননি বঙ্গবন্ধুকে। শুধু গল্প শুনেছেন। আর এ গল্পের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন তার নিজ হাতের তৈরী চেয়ারের নকশায়। হৃদয়ে লালন করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের চেহারা ফুটিয়ে তুলেছেন কাঠের নকশাতে।
মেহেরপুরের গাংনীর প্রত্যন্ত এলাকা আমতৈল গ্রাম। গ্রামের ছোট্ট বাজরে রয়েছে সফর আলীর একটি ফার্নিচার দোকান। ছোটবেলা থেকেই হাতুড়ি বাটালের সাথে তার পরিচয়। বাবার কাছ থেকে কাঠের কাজের হাতেখড়ি। সাংসারিক প্রয়োজনে তাকে বেছে নিতে হয়েছে সুত্রধরের কাজ। তার হাতের নকশা খচিত অন্যান্য আসবাবপত্র বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে তার নকশাতে ফুটিয়ে তোলায় স্বপ্ন দেখেন সফর আলী। তিলে তিলে চেয়ারে আঁকেন শেখ মুজিবরের আবক্ষ চিত্র। পেশাগত কোন চিত্রশিল্পীর সৃষ্টি কর্মের মতই ফুটিয়ে তুলেছেন স্বাধীনতার মহা নায়কের প্রতিচ্ছবি।
একই সাথে চেয়ারের বিভিন্ন স্থানে খোদাই করা হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের খণ্ড চিত্র ও আবহমান বাংলার রূপ। যা দেখলে একাত্তরের যুদ্ধ ও হানাদার বাহিনীর বর্বরতা বোঝা যায়। দীর্ঘ চার বছর ধরে পেশাগত কাজের ফাঁকে ফাঁকে জাতির পিতাকে তুলে ধরেছেন ভিন্ন আঙ্গিকে। অসাধারণ এই কাজের জন্য এলাকার মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন কাঠমিস্ত্রি সফর আলী। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালবাসার শিল্প কর্মটি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিাকে উপহার দিতে চান তিনি।
সুত্রধর সফর আলী বলেন, ছোটকাল থেকে কাঠের কাজ শিখেছি। বাবা আরমান আলী কজ শেখাতে শেখাতে মুক্তিযুদ্ধের গল্প করতেন। সে কথাগুলো হৃদয়ে ধারণ করে একটি চেয়ার তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ি চেয়ারে মুক্তিযুদ্ধ ও হানাদার বাহিনীর প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। একই সাথে স্বাধিনতার মহানায়ক বঙ্গ বন্ধুর ছবি খোদাই করা হয়।
ষোলটাকা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশা জানান, নতুন প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরার জন্য সফর আলীর সৃষ্টি এলাকাবাসী ও তার পরিবারের জন্য বড় গর্বের বিষয়। একজন সাধারণ কাঠমিস্ত্রির এই অনন্য সৃষ্টিকর্মে বঙ্গবন্ধু ও যুদ্ধের যে প্রতিচ্ছবি তা এলাকার মানুষ মুগ্ধ করেছে।
গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ খালেক জানান, তার এই শিল্পকর্ম বেশ প্রশংসনীয়। শুধু সফর আলী নয়, সকলকেই বঙ্গবন্ধু ও তার আদর্শকে লালন করা উচিৎ। সফর আলী যে চেয়ারটি প্রধান মন্ত্রীকে উপহার দিতে চান তা হাই কমান্ডকে অবহিত করবেন ও যতদূর সম্ভব তার জন্য চেষ্টা করবেন তিনি।
এএইচ