ছবি: গ্লোবাল টিভি
এম এ কাইয়ুম, মাদারীপুরঃ বাজারে এসে সাত বছরের রোজিনা হারিয়ে যায় শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা থেকে। বাড়ির খোঁজে ভুলে উঠে পড়ে মাদারীপুরের কোন এক গাড়িতে। অস্বাভাবিক ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ তাকে নিয়ে যায় মাদারীপুর সদর থানায়। রোজিনা তার সঠিক ঠিকানা বলতে না পারায় পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে। আদালতের নির্দেশে রোজিনাকে পাঠানো হয় ফরিদপুর সেফহোমে।
এক মাস পর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন আদালত। কিন্তু এক মাসতো দূরের কথা, ১২ বছরেও সেফহোম কোন প্রতিবেদন দাখিল করেনি। দীর্ঘ ১২ বছর পর রোজিনার ফাইলটি নজরে আসে সেফ হোমের এক কর্মকর্তার, তিনি ফাইলটি মাদারীপুর আদালতে প্রেরণ করেন।
ফাইলটি নজরে আসে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ নীরবের। তাৎক্ষণিক তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের ডেকে নিউজ করতে বলেন। ৫ মাস আগে গ্লোবাল টেলিভিশনে এ নিয়ে নিউজ প্রচারিত হলে রোজিনার পরিবার, আত্মীয়রা রোজিনার সন্ধান পায়। ৩ বছর বয়সে রোজিনার মা মারা যায়। ৫ বছর বয়সে বাবা মারা যায়।
একমাত্র সন্তান হওয়ায় রোজিনাকে শনাক্ত করতে আত্মীয়দের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতোদিন সেফহোমের বন্দিশালায় থেকে রোজিনা কিছুটা মানসিক রোগী হয়ে যায়। আত্মীয়দের চিনতে না পারায় রোজিনাকে পাঠানো হয় পাবনা মানসিক হাসপাতালে।
এর মধ্যে রোজিনা ও তার আত্মীয়দের ডিএনএ পরীক্ষায় মামা ও খালার সাথে মিল থাকায় রোজিনাকে ৫ মাস উন্নত চিকিৎসা শেষে ১৫ নভেম্বার মঙ্গলবার রোজিনাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সচেতন মহলের দাবী, রোজিনার মতো আর যেন দায়িত্বশীলদের গাফলতির কারণে কারো জীবন থেকে মূল্যবান সময় নষ্ট না হয়। আর যারা দায়িত্ব অবহেলা করছে, তাদের যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।
এএইচ