ছবি: গ্লোবাল টিভি
মোঃ ফারুক হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে বারোমাসি তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়েছেন কৃষকরা। এই তরমুজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। চাষিরা বলছেন, এক জমিতে বছরে ৩ বারেরও বেশি চাষ করা সম্ভব এ তরমুজ। এ তরমুজ দেখতে কালো ও চকড়াপকড়া হলেও ভেতর লাল এবং হলুদ। এ দুই ধরনের তরমুজ রসাল ও খেতে মিষ্টি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার আমনুরা জামতলা এলাকায় আমিরা এগ্রো ফার্ম এন্ড নার্সারিতে মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় বারোমাসি ব্ল্যাক বেবি ও কানিয়া জাতের সুমিষ্টি তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কামরুল ইসলাম। মাত্র ১৫ কাঠা জমিতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার প্রথমে পরীক্ষামুলক চাষ শুরু করেন তিনি। ১৫ কাঠা জমিতে প্রথমবারই প্রায় ১ লাখ টাকা তরমুজ বিক্রি করেন। এবারও একই জমিতে আগের মাচায় নিজ উদ্যোগে এই দুই ধরনের তরমুজ চাষ করেন। এখন গাছে গাছে কালো ও চকড়াপকড়া তরমুজ দুলছে। বীজ লাগার ৩০-৩৫ দিনের মাথায় গাছে ফল আসে এবং দুই থেকে আড়াই মাসের মাথায় তরমুজগুলো বিক্রি করার উপযোগী হয়। প্রত্যেকটি তরমুজ ২-৩ কেজি ওজন হয়ে থাকে। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হয় ৬০-৭০ টাকা দরে। গতবারের চেয়ে এবছর দ্বিগুন লাভের কথা বলেন।
তরমুজ চাষী কামরুল ইসলাম বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার লাভ বেশি হবে। কারণ, এবার ফলন ভাল হয়েছে ও দামও অনেক বেশি। মালচিং পদ্ধতিতে মাচার মাধ্যমে বছরের তিন থেকে চার বার পযন্ত তরমুজ চাষ করা যায় ফলে খরচ কম লাভ বেশি।
আরেক কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা সুমন বলেন, আমি কামরুল ভাইয়ের তরমুজ ক্ষেত দেখতে এসেছি কিভাবে এক মাচায় কয়েকবার তরমুজ চাষ করা যায়। এর পূর্বে আমার জানা ছিল না এক মাচায় কয়েকবার তরমুজ চাষ করা যায় আজ এখান থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম আগামীতে আমিও কামরুল ভাইয়ের মত মালচিং পদ্ধতিতে মাচাই তরমুজ চাষ করবো।
আরেক কৃষি উদ্যোক্তা বলেন, এই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করলে যেমন আগাছা কম হবে তেমনি পানিও কম লাগবে। এ পদ্ধতিতে তরমুজের কলিটি টা অনেক ভাল হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম জানান, অসময়ের তরমুজটির চাহিদা থাকায় বিভিন্ন কৃষককে তরমুজ চাষে পরামর্শসহ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কানিজ তাসনফা জানান, অসময়ের তরমুজ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এখন তরমুজ চাষে চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়েছে। মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে একই সেড ও মাচা কয়েকবার ব্যবহার করায় উৎপাদন খরচ কম হয়। তিনি আরও জানান তিন মাস আগেই অসময়ের বারোমাসি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১৬ শ থেকে ১৭ শ টাকা দরে। এবার বিক্রি হচ্ছে ২৭ শ থেকে ২৮শ টাকা দরে।
এএইচ