ফাইল ছবি
মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম : মা, মা, ও মা। মা গো মা । এই নাম ডাকার মাঝে যে মাধুর্য, যে আবেগ তা এই জগতে আর অন্য কিছুতে মেলে না।
মাকে নিয়ে প্রতিটি মানুষের জীবনেই অনেক গল্প রয়েছে। কেউ প্রকাশের সুযোগ পায়, কেউবা পায় না। কিন্তু অপার্থিব ভালোবাসার গল্পগুলো মনের গহিনে ঠিকই যুগ যুগান্তর ধরে মালার মতো গেঁথে রয়েছে।
একবার এক সাহাবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে জিজ্ঞেস করছিলেন পিতা-মাতার গুরুত্ব সম্পর্কে। তখন তিনি সাহাবীকে তিনবারই মায়ের কথা জানিয়েছিলেন। চতুর্থবারের সময় পিতার কথা বলেছিলেন। পাঠক বুঝতেই পারছেন, মায়ের মর্যাদা কতখানি।
মা ছাড়া সন্তানদের জন্য পৃথিবীই যে অন্ধকার। অথচ আজকাল ভার্চুয়াল জগতে এক শ্রেণির লেখক এই মাকেই বিতর্কিত করার হীন প্রয়াসে লিপ্ত।
বছরের একটা দিন মানে এপ্রিলের ২য় রবিবার বেশ ঘটা করে আন্তর্জাতিকভাবে মা দিবস পালন করা হয়। যার সাথে আমি একমত নই। মাকে ভালোবাসতে কোন দিন-তারিখ কেন লাগবে! মায়ের জন্য শ্রদ্ধা, ভালোবাসা বছরের প্রতিটি দিনই। বরং খোঁজ নিলে দেখা যাবে, যে সব দেশে এরকম মধুর সম্পর্কটাকে দিবস কেন্দ্রিক করে তুলেছে তাদের দেশেই রয়েছে অধিক বৃদ্ধাশ্রম।
মাকে নিয়ে যুগেযুগে অনেক কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ, বড় বড় লেখকদের মনের ভাষা, কাগজে কলমে প্রকাশিত হয়ে আসছে।
তেমনি আমার মাকে নিয়েও আমার অনেক গল্প রয়েছে।
আমার মা মাহমুদা সুলতানার জন্যই আজ আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। পড়ালেখায় তেমন আগ্রহী ছিলাম না আমি। এসএসসি পরীক্ষা এলো। মা আমার রাত জেগে পাশে বসে থাকতেন। আর বুঝাতেন, 'বাবা তুই অন্তত মেট্রিকটা পাস কর। তা না হলে যে আমি কোন আত্মিয়স্বজনদের কাছে মুখ দেখাতে পারব না। তুই বাবা মন দিয়ে পড়।'
কথাগুলো আমার মনের ভিতর বেশ আঁচড় কাটল। আমি মায়ের মুখ উজ্জ্বল করার জন্য কিছুটা আগ্রহী হলাম।
মেধাশক্তিও খুব একটা খারাপ ছিল না আমার। যে কারণে এসএসসি'তে উতরে যাই।
আরো অনেক গল্প ভিড়ে যা না বললেই নয়। আমি যে দুর্গম পাহাড়, জঙ্গলে ভ্রমণ করি সেখানেও রয়েছে আমার মায়ের দোয়া। আমার আব্বা রাগারাগি করলে আমার মা তখন বলেন, তুমি দোয়া করো ওর জন্য। আমার ছেলে ঠিকই পাহাড়-পর্বত জয় করে আসবে, ইনশাআল্লাহ।
জগতের সব মা'ই তার সন্তানকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসেন। জগতের প্রতিটা সন্তানই হোক মায়ের আদর-স্নেহ-ভালোবাসায় সিক্ত।
এএইচ/জেইউ